গতকাল (৪ মার্চ) বিকালে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার ঈসানগর এলাকায় অবস্থিত এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজের গুদামে লাগা আগুন ১৭ ঘণ্টা পর আজ (৫ মার্চ) সকাল ৯টা পর্যন্ত পুরোপুরি নেভানো যায়নি।
অগ্নিনির্বাপক কর্মকর্তারা বলছেন, গুদামে মজুত থাকা এক হাজার কোটি টাকা মূল্যের প্রায় এক লাখ টন অপরিশোধিত চিনির কারণে আগুন নেভানোর প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে। অপরিশোধিত চিনি অত্যন্ত দাহ্য পদার্থ।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক পুণ্য চন্দ্র বলেন, অপরিশোধিত চিনিতে আগুন লাগলে তাতে পানি স্প্রে করা হলে অক্সিজেন ও কার্বনের অণু আলাদা হয়ে আগুন আরও বেড়ে যায়।
তিনি বলেন, চিনির রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যের কারণে আগুন নেভাতে সময় লাগছে।
পুণ্য চন্দ্র বলেন, 'আমরা গতকাল সন্ধ্যা থেকে অক্লান্ত কাজ করছি, কিন্তু এখনও আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারিনি। চারদিক থেকে পানি দিয়ে গুদামের আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও ভেতরে অপরিশোধিত চিনি জ্বলছে।
'আগুন কখন পুরোপুরি নেভাতে পারব, তা বলা কঠিন। কারণ আমরা এখনও পানি ছিটানোর জন্য গুদামে প্রবেশ করতে পারিনি।'
গতকাল বিকাল ৩টা ৫৫ মিনিটের দিকে আগুন লাগার পর বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কয়েকটি দল ১৪টি ফায়ার ফাইটিং ইউনিটের সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
অন্যান্য দলগুলো গতকাল রাতে ঘটনাস্থল ছাড়ে, তবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি দল জরুরি দেওয়ার জন্য ঘটনাস্থলে রয়ে গেছে।
কর্ণফুলী ফায়ার স্টেশনের গুদাম পরিদর্শক শোয়েব হোসেন মুন্সি বলেন, 'আগুন কীভাবে লেগেছে তা এখনো জানা যায়নি। তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।'
এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ-এ দুটি পরিশোধনাগার রয়েছে। এর মধ্যে প্ল্যান্ট-১ এর দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা ৯০০ মেট্রিক টন। অন্যদিকে প্ল্যান্ট-২ দৈনিক ১,৬০০ মেট্রিক টন পর্যন্ত উৎপাদন করতে পারে। কারখানাটি থাইল্যান্ড এবং ফ্রান্সের প্রযুক্তিগত সহায়তায় পরিচালিত হয়।
আগুনের লাগার ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।
সোমবার (৪ মার্চ) বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটে কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর এলাকায় অবস্থিত চিনি পরিশোধনের কারখানাটির গুদামে আগুনের লাগে। এখনো ক্ষয়ক্ষতির হিসেব পাওয়া না গেলেও এর আগে আগুনে আনুমানিক এক হাজার
কোটি টাকা মূল্যের প্রায় এক লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত চিনি পুড়ে যাওয়ার ঝুঁকির কথা জানা গিয়েছিল।
রাত ৯টার দিকে বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ তোফায়েল ইসলাম ও জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানান। তারা সাংবাদিকদের বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোহাম্মদ শাওন
২৫/২ লারমিনি ষ্ট্রীট, ওয়ারী, ঢাকা।
ইমেইলঃ newsdesk@dhakadaily.com.bd
© ঢাকা ডেইলি